মুসলিম হয়েও ১৭ শ্রেণির লোক জান্নাতে যাবে না -
ঐ ধরনের কিছু গুনাহ নিম্নরূপ—
১। হারাম খাদ্য ভক্ষণকারী জান্নাতে যাবে না। (সুনানে বায়হাকি : ৫৫২০)
২। আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে যাবে না। (সহিহ বুখারি : ৫৫২৫)
৩। প্রতিবেশীকে কষ্ট দানকারী জান্নাতে যাবে না। (সহিহ মুসলিম : ৬৬)
৪। মাতা-পিতার অবাধ্য সন্তান ও দাইয়ুস নারী জান্নাতে যাবে না : রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তিন শ্রেনির লোক জান্নাতে যাবে না—মাতা-পিতার অবাধ্য, দাইয়ুস (অর্থাৎ যে ব্যক্তি তার স্ত্রী-বোন প্রমুখ অধীনস্থ নারীকে বেপর্দা চলাফেরায় বাধা দেয় না) এবং পুরুষের বেশ ধারণকারী মহিলা।’ (মুসতাদরাকে হাকেম : ২২৬)
৫। অশ্লীলভাষী ও উগ্র মেজাজি জান্নাতে যাবে না। (আবু দাউদ : ৪১৬৮)
৬। প্রতারণাকারী শাসক জান্নাতে যাবে না।
(সহিহ বুখারি : ৬৬১৮)
৭। অন্যের সম্পদ আত্মসাৎকারী জান্নাতে যাবে না।
যদিও পিপুলগাছের একটি ছোট ডাল হোক না কেন। (সহিহ মুসলিম : ১৯৬)
৮। খোঁটাদানকারী, অবাধ্য সন্তান ও মদ্যপানকারী জান্নাতে যাবে না। (সুনানে নাসায়ি : ৫৫৭৭)
৯। চোগলখোর জান্নাতে যাবে না। (সহিহ মুসলিম : ১৫১)
১০। অন্য পিতার সঙ্গে সম্বন্ধকারী জান্নাতে যাবে না । অর্থাৎ নিজেকে অন্য পিতার সন্তান বলে পরিচয় দেয়, তার জন্য জান্নাত হারাম। (সহিহ বুখারি : ৬২৬৯)
১১। গর্ব-অহংকারকারী জান্নাতে যাবে না। যার অন্তরে অণু পরিমাণ অহংকার রয়েছে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (সহিহ মুসলিম : ১৩১)
১২। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নাফরমান জান্নাতে যাবে না। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন যে আমার আনুগত্য করে, সে জান্নাতে যাবে। আর যে আমার নাফরমানি করে, সে (জান্নাতে যেতে) অস্বীকার করেছে। ’ (সহিহ বুখারি : ৬৭৩৭)
১৩। দুনিয়াবি উদ্দেশ্যে ইলম অর্জনকারী জান্নাতে যাবে না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন :যে ইলম দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অন্বেষণ করা হয় সেই ইলম যে ব্যক্তি দুনিয়াবি কোনো স্বার্থ-সম্পদ হাসিলের উদ্দেশ্যে শিক্ষা করে, সে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। ’ (আবু দাউদ : ৩১৭৯)
১৪। অকারণে তালাক কামনাকারী নারী জান্নাতে যাবেনা। (তিরমিজি : ১১০৮)
১৫। কালো কলপ ব্যবহারকারী জান্নাতে যাবে না : রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘শেষ যুগে কিছু লোক কবুতরের সিনার ন্যায় কালো কলপ ব্যবহার করবে। তারা জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। ’ (সুনানে নাসায়ি : ৪৯৮৮)
১৬। লৌকিকতা প্রদর্শনকারী জান্নাতে যাবে না : আবু হুরাইরা (রা.) সূত্রে বর্ণিত এক দীর্ঘ হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম একজন শহীদকে ডাকা হবে। অতঃপর একজন কারিকে। তারপর একজন দানশীল ব্যক্তিকে হাজির করা হবে। প্রত্যেককে তার কৃতকর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। অতঃপর শহীদকে বীর-বাহাদুর উপাধি লাভের উদ্দেশ্যে জিহাদ করার অপরাধে, কারি সাহেবকে বড় কারির উপাধি ও সুখ্যাতি লাভের জন্য কিরাত শেখার অপরাধে এবং দানশীলকে বড় দাতা উপাধি লাভের নিয়তে দান-সদকা করার অপরাধে উপুড় করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। ’ (সহিহ মুসলিম : ৩৫২৭)
১৭। ওয়ারিসকে বঞ্চিতকারী জান্নাতে যাবে না : রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো ওয়ারিসকে তার অংশ থেকে বঞ্চিত করল, আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাতের অংশ থেকে বঞ্চিত করবেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ : ২৬৯৪)
আল্লাহ আমাদেরকে এ শ্রেণির লোক হওয়া থেকে হেফাযতে রাখুন। আ-মীন।
[সংগৃহীত ও পরিমার্জিত]
0 Comments